ঢাকা ০৪:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মৌলভীবাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু

মর্মান্তিক

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:৪২:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪
  • ৩৪ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বসতঘরের উপর বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে স্বামী-স্ত্রী ও ৩ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এক শিশু গুরুতর আহত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে নিহত ৫ জনকে জানাজা শেষে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) জেলার জুড়ী উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ি গ্রামে সেহরির পর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ওই বাড়িতে ফয়জুর রহমান তার পরিবারের ৬ সদস্যসহ একটি টিনের ঘরে বসবাস করতেন। ওই ঘরের উপর দিয়ে উচ্চ ভোল্টেজ ক্ষমতা সম্পন্ন ১১ কেভি পল্লী বিদ্যুতের লাইন ছিল।

ঝড়-বৃষ্টিতে সেহরির পর বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে ঘরের চালে পড়লে আগুন লেগে যায়। এ সময় ঘরের ভেতরে থাকা প্রতিবন্ধী ঠেলা চালক ও হাজি ইন্তাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ্যপ্রহরী ফয়জুর রহমান (৫২), স্ত্রী শিরিন বেগম (৪৬), বড় মেয়ে সামিয়া (১৬), মেঝ মেয়ে সাবিনা (১৩) ও ছেলে সায়েম (৮) আগুনে পুড়ে ঘরের ভেতর মারা যায়। এ ঘটনায় ছয় বছরের মেয়ে সোনিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে মেয়ে সামিয়া বেগম নবম শ্রেণি ও সাবিনা বেগম সপ্তম শ্রেণি ছেলে সায়েম আহমদ ২য় শ্রেণিতে পড়তো ও আহত সোনিয়া ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ঘরের টিনের চালায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ার সাথে সাথে আগুন লেগে বসত ঘরের আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহত শিশু ও লাশ উদ্ধার করে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিজের জমি না থাকায় রহমত আলী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির পতিত জমিতে ঘর তৈরি করেছিলেন ফয়জুর রহমান। গতকাল বিকেল ৪টায় হাজি ইন্তাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফয়জুর রহমানের ভাগনা মাওলানা তামিম আহমদের ইমামতিত্বে জানাজা শেষে তাদেরকে গ্রামের একটি পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় ওই গ্রামসহ পুরো উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমেছে। গতকাল সকাল থেকেই এই মর্মান্তিক ঘটনার খবরটি ছিলো টক অব দ্য জেলা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের গাফলতিকেই দায় দিচ্ছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনার খবরে জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকর্মীদের জানান প্রবল ঝড় তুফানের কারণে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় তাদের এই ঘর নির্মাণের সময় বাঁধা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু নিহত পরিবারের ঘর বাঁধার মতো অন্য কোনো জমি ছিল না। তবে ওই এলাকাসহ অন্যান্য স্থানের এরকম ঝুঁকির বিষয়ে দৃষ্টি আর্কষণ করলে তারা তা এড়িয়ে যান।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মৌলভীবাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু

মর্মান্তিক

আপডেট সময় ১২:৪২:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বসতঘরের উপর বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে স্বামী-স্ত্রী ও ৩ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এক শিশু গুরুতর আহত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে নিহত ৫ জনকে জানাজা শেষে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) জেলার জুড়ী উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ি গ্রামে সেহরির পর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ওই বাড়িতে ফয়জুর রহমান তার পরিবারের ৬ সদস্যসহ একটি টিনের ঘরে বসবাস করতেন। ওই ঘরের উপর দিয়ে উচ্চ ভোল্টেজ ক্ষমতা সম্পন্ন ১১ কেভি পল্লী বিদ্যুতের লাইন ছিল।

ঝড়-বৃষ্টিতে সেহরির পর বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে ঘরের চালে পড়লে আগুন লেগে যায়। এ সময় ঘরের ভেতরে থাকা প্রতিবন্ধী ঠেলা চালক ও হাজি ইন্তাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ্যপ্রহরী ফয়জুর রহমান (৫২), স্ত্রী শিরিন বেগম (৪৬), বড় মেয়ে সামিয়া (১৬), মেঝ মেয়ে সাবিনা (১৩) ও ছেলে সায়েম (৮) আগুনে পুড়ে ঘরের ভেতর মারা যায়। এ ঘটনায় ছয় বছরের মেয়ে সোনিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে মেয়ে সামিয়া বেগম নবম শ্রেণি ও সাবিনা বেগম সপ্তম শ্রেণি ছেলে সায়েম আহমদ ২য় শ্রেণিতে পড়তো ও আহত সোনিয়া ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ঘরের টিনের চালায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ার সাথে সাথে আগুন লেগে বসত ঘরের আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহত শিশু ও লাশ উদ্ধার করে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিজের জমি না থাকায় রহমত আলী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির পতিত জমিতে ঘর তৈরি করেছিলেন ফয়জুর রহমান। গতকাল বিকেল ৪টায় হাজি ইন্তাজ আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফয়জুর রহমানের ভাগনা মাওলানা তামিম আহমদের ইমামতিত্বে জানাজা শেষে তাদেরকে গ্রামের একটি পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় ওই গ্রামসহ পুরো উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমেছে। গতকাল সকাল থেকেই এই মর্মান্তিক ঘটনার খবরটি ছিলো টক অব দ্য জেলা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের গাফলতিকেই দায় দিচ্ছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনার খবরে জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকর্মীদের জানান প্রবল ঝড় তুফানের কারণে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় তাদের এই ঘর নির্মাণের সময় বাঁধা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু নিহত পরিবারের ঘর বাঁধার মতো অন্য কোনো জমি ছিল না। তবে ওই এলাকাসহ অন্যান্য স্থানের এরকম ঝুঁকির বিষয়ে দৃষ্টি আর্কষণ করলে তারা তা এড়িয়ে যান।