ঢাকা ১২:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:৩৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
  • ৩৯ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় গলায় কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে সালাহউদ্দিন ওরফে টনি (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ এ রায় দেন। সালাহউদ্দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আব্দুল খালেক বলেন, আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে নিয়ামতপুর উপজেলার ধানসা গ্রামের আবু কালামের মেয়ে তুকাজ্জেবার (২৪) সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের সালাহউদ্দিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সালাহউদ্দিন তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। ২০২০ সালের ২৯শে জুন তুকাজ্জেবা স্বামী সালাহউদ্দিনকে নিয়ে বাবার বাড়ি নিয়ামতপুরের ধানসা গ্রামে বেড়াতে আসেন। পারিবারিক কলহের জেরে শ্বশুরবাড়িতে থাকা অবস্থায় ১লা জুলাই সালাহউদ্দিন তার স্ত্রীর গলায় কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে গুরুত্বরভাবে জখম করে।

ওই সময় ঘর থেকে চিৎকারের শব্দ পেয়ে তার বাবা ও মা বাইরে থেকে ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে প্রতিবেশী রবিউল ইসলাম লাথি মেরে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তুকাজ্জেবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় সালাহউদ্দিনের হাতে কাপড় কাটার কাঁচি দেখতে পান তারা। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তুকাজ্জেবাকে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্ত্রীকে আহত করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন সালাহউদ্দিনকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় নিহত তুকাজ্জেবার বাবা আবু কালাম বাদী হয়ে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালতে ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের দীর্ঘ সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দোষী নওগাঁর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী আতিকুর রহমান বলেন, শুধু জবানবন্দির উপর এ রায় দিয়েছেন। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বিমানবন্দরে হাসি-কান্নার গল্প

নওগাঁয় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

আপডেট সময় ১২:৩৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় গলায় কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে সালাহউদ্দিন ওরফে টনি (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ এ রায় দেন। সালাহউদ্দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আব্দুল খালেক বলেন, আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে নিয়ামতপুর উপজেলার ধানসা গ্রামের আবু কালামের মেয়ে তুকাজ্জেবার (২৪) সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের সালাহউদ্দিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সালাহউদ্দিন তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। ২০২০ সালের ২৯শে জুন তুকাজ্জেবা স্বামী সালাহউদ্দিনকে নিয়ে বাবার বাড়ি নিয়ামতপুরের ধানসা গ্রামে বেড়াতে আসেন। পারিবারিক কলহের জেরে শ্বশুরবাড়িতে থাকা অবস্থায় ১লা জুলাই সালাহউদ্দিন তার স্ত্রীর গলায় কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে গুরুত্বরভাবে জখম করে।

ওই সময় ঘর থেকে চিৎকারের শব্দ পেয়ে তার বাবা ও মা বাইরে থেকে ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে প্রতিবেশী রবিউল ইসলাম লাথি মেরে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তুকাজ্জেবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় সালাহউদ্দিনের হাতে কাপড় কাটার কাঁচি দেখতে পান তারা। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তুকাজ্জেবাকে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্ত্রীকে আহত করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন সালাহউদ্দিনকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় নিহত তুকাজ্জেবার বাবা আবু কালাম বাদী হয়ে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালতে ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের দীর্ঘ সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দোষী নওগাঁর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী আতিকুর রহমান বলেন, শুধু জবানবন্দির উপর এ রায় দিয়েছেন। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।