ঢাকা ১২:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রিমোট দিয়ে ওজন কমিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ঠকাতো চক্রটি

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:২২:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার পশ্চিম বাজার এলাকার মৃত রুক্কু মিয়ার ছেলে সিরাজুল ইসলাম ওরফে সজীব (৩৩)। পেশায় ইলেকট্রিক মেকানিক। তবে অনলাইন থেকে বিশেষ কিছু সার্কিট সংগ্রহ করে ডিজিটাল ওজন মেশিন কারসাজির মাধ্যমে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ওজন কম-বেশি করার কৌশল রপ্ত করেন। আর এই কৌশল ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকার কাপ্তান বাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে পণ্য বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ীদের পণ্যের ওজন কমিয়ে দিতেন। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে পাইকারি পণ্য বিক্রেতা ও ক্রেতাদের ঠকিয়ে আসছিলেন সজীব ও তার চক্রের সদস্যরা। সম্প্রতি ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজধানীর কাপ্তান বাজারে অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মতিঝিল বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সিরাজুল ইসলাম ওরফে সজীব (৩৩), মো. মনির (৩৫), মো. লিটন (৩৮), মো. আলাউদ্দিন খান (২৮)। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই তথ্য জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, আমরা নতুন ধরনের একটি অপরাধ চক্রকে গ্রেপ্তার করেছি। এর আগে আমরা শুধু শুনতাম পণ্য পাইকারি বিক্রি করতে এসে অনেকেই ওজনে গরমিল পেতেন। অনেক সময় ক্রেতারাও এমন অভিযোগ করতেন।

পরবর্তীতে এমন অভিযোগকে সামনে রেখে কাজ শুরু করে ডিবি’র মতিঝিল বিভাগ। সেই অভিযানেই তাদের হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি সদস্যরা। রমজান মাস চলছে। সামনে ঈদ। ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। বাজার মোটামুটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। আমরা অভিযানে নেমে দেখলাম ঢাকার পাইকারি বাজারগুলোতে ওজনে কম দেয়া হচ্ছে। আমরা অভিযানে নেমে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ওজনে কম দেয়া চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত করতে গিয়ে আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটি একটি প্রতারণার নতুন ধরন।

হারুন অর রশীদ বলেন, সজীব পেশায় একজন টেলিভিশন মেকানিক। সে অনলাইন থেকে বিশেষ সার্কিট ও রিমোট অনলাইনে সংগ্রহ করে ডিজিটাল ওজন মেশিনে কারসাজি করে। ফলে ২০০ কেজি পণ্যের ওজন দূরে বসে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ইচ্ছেমতো কমানো যেতো। এগুলো সে বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মেকানিক সজীব প্রতিটি মেশিন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করতো। এই চক্রের কাছে ওজন কম দেয়ার সাংকেতিক শব্দ হলো ‘গাপসি’। এর অর্থ হলো ওজনে কম দিতে হবে। এই সকল মেশিন কাপ্তান বাজারে অসাধু পাইকারি মুরগি বা মাংস বিক্রেতারা ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। তবে তাদের টার্গেট থাকে নতুন পণ্য বিক্রেতা ও পাইকারি ক্রেতারা। তবে তারা পুরাতন পাইকারি ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করতো না। রমজানে বাজারে পণ্যের মূল্যের কারসাজি প্রতিরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পণ্যের মূল্য কারসাজির বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে কাজ করছে। পাশাপাশি ভোক্তা অধিদপ্তর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে কাজ করছে। কোথাও অনিয়মের অভিযোগ পেলেই গোয়েন্দা পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রিমোট দিয়ে ওজন কমিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ঠকাতো চক্রটি

আপডেট সময় ১২:২২:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর থানার পশ্চিম বাজার এলাকার মৃত রুক্কু মিয়ার ছেলে সিরাজুল ইসলাম ওরফে সজীব (৩৩)। পেশায় ইলেকট্রিক মেকানিক। তবে অনলাইন থেকে বিশেষ কিছু সার্কিট সংগ্রহ করে ডিজিটাল ওজন মেশিন কারসাজির মাধ্যমে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ওজন কম-বেশি করার কৌশল রপ্ত করেন। আর এই কৌশল ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকার কাপ্তান বাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে পণ্য বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ীদের পণ্যের ওজন কমিয়ে দিতেন। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে পাইকারি পণ্য বিক্রেতা ও ক্রেতাদের ঠকিয়ে আসছিলেন সজীব ও তার চক্রের সদস্যরা। সম্প্রতি ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজধানীর কাপ্তান বাজারে অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মতিঝিল বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সিরাজুল ইসলাম ওরফে সজীব (৩৩), মো. মনির (৩৫), মো. লিটন (৩৮), মো. আলাউদ্দিন খান (২৮)। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই তথ্য জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, আমরা নতুন ধরনের একটি অপরাধ চক্রকে গ্রেপ্তার করেছি। এর আগে আমরা শুধু শুনতাম পণ্য পাইকারি বিক্রি করতে এসে অনেকেই ওজনে গরমিল পেতেন। অনেক সময় ক্রেতারাও এমন অভিযোগ করতেন।

পরবর্তীতে এমন অভিযোগকে সামনে রেখে কাজ শুরু করে ডিবি’র মতিঝিল বিভাগ। সেই অভিযানেই তাদের হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি সদস্যরা। রমজান মাস চলছে। সামনে ঈদ। ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। বাজার মোটামুটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। আমরা অভিযানে নেমে দেখলাম ঢাকার পাইকারি বাজারগুলোতে ওজনে কম দেয়া হচ্ছে। আমরা অভিযানে নেমে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ওজনে কম দেয়া চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত করতে গিয়ে আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটি একটি প্রতারণার নতুন ধরন।

হারুন অর রশীদ বলেন, সজীব পেশায় একজন টেলিভিশন মেকানিক। সে অনলাইন থেকে বিশেষ সার্কিট ও রিমোট অনলাইনে সংগ্রহ করে ডিজিটাল ওজন মেশিনে কারসাজি করে। ফলে ২০০ কেজি পণ্যের ওজন দূরে বসে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ইচ্ছেমতো কমানো যেতো। এগুলো সে বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মেকানিক সজীব প্রতিটি মেশিন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করতো। এই চক্রের কাছে ওজন কম দেয়ার সাংকেতিক শব্দ হলো ‘গাপসি’। এর অর্থ হলো ওজনে কম দিতে হবে। এই সকল মেশিন কাপ্তান বাজারে অসাধু পাইকারি মুরগি বা মাংস বিক্রেতারা ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। তবে তাদের টার্গেট থাকে নতুন পণ্য বিক্রেতা ও পাইকারি ক্রেতারা। তবে তারা পুরাতন পাইকারি ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করতো না। রমজানে বাজারে পণ্যের মূল্যের কারসাজি প্রতিরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পণ্যের মূল্য কারসাজির বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে কাজ করছে। পাশাপাশি ভোক্তা অধিদপ্তর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে কাজ করছে। কোথাও অনিয়মের অভিযোগ পেলেই গোয়েন্দা পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।