ঢাকা ১২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং আরব বিশ্বের সংকীর্ণতা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৭:২১:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৭০ বার পড়া হয়েছে

আরব-ইসরায়েলের মধ্যে ১৯৪৮ সালের যুদ্ধের পর থেকে ফিলিস্তিনে যে যুদ্ধ শুরু, সেটা চলছে এখনো। পঞ্চাশ বছর আগে ১৯৭৩ সালে তৃতীয় আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর আরব দেশগুলোর সঙ্গে আর কোন যুদ্ধ না হলেও ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব-সংঘাত বন্ধ হয়নি। যদিও সংঘাত বন্ধে শান্তির ফরমুলা হিসেবে বিভিন্ন সময় দুই রাষ্ট্র সমাধানের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সেটা আর বাস্তবে রূপ নেয়নি।

অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের মুক্তির প্রশ্নে গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে যে আকস্মিক ও দুঃসাহসী হামলা চালিয়েছে, তার জবাবে ইসরায়েল গত এক মাস গাজার অভ্যন্তরে নির্বিচারে হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এতে অভিনব টানেলভিত্তিক সমর কৌশল গ্রহণ করা হামাস বাহিনীর তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারেনি ইহুদিবাদী সেনাবাহিনী।

বরং ইহুদিবাদীরা এক অবশ্যম্ভাবী পরাজয়ের মুখে পড়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। হামাস ৭ অক্টোবর যে আক্রমণের সূচনা করেছে, সেটি হচ্ছে একটি সামরিক অভিযান। আর ইহুদিবাদী ইসরায়েল গত এক মাসব্যাপী যা করেছে, তা হচ্ছে একটি নারকীয় গণহত্যা। গাজার নিরীহ ও নিরস্ত্র নারী, শিশু ও বৃদ্ধ জনগোষ্ঠীকে নির্বিচারে হত্যা করা এবং তাদের আশ্রয়স্থল কিংবা অবকাঠামোগত ব্যবস্থাকে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে উড়িয়ে দেওয়া-তাতে ইহুদিবাদীরা তাদের হামাসের বিরুদ্ধে ঘোষিত যুদ্ধে কোনো সাফল্য পায়নি।

বরং একদিকে অর্জন করেছে এ যুগের নিকৃষ্টতম গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ, অন্যদিকে এই তথাকথিত যুদ্ধে পরাজয়ের গ্লানি। হামাসের চলমান দুঃসাহসী ও অভিনব সামরিক অভিযানকে বিশ্বব্যাপী বলা হচ্ছে এক কাক্সিক্ষত মুক্তিযুদ্ধ।

অন্যদিকে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের বর্তমান সরকার ও সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় বশংবদদের সমর্থন ও প্রকাশ্য মদদে যা করছে, তার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে আরব দেশগুলোতে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। তবে শুধু মুখের বুলি যথেষ্ট নয়। জাতিসংঘের প্রস্তাব যথেষ্ট নয়।

আনুষ্ঠানিক নিন্দা যথেষ্ট নয়। সামান্য পরিমাণ ত্রাণ পাঠানো যথেষ্ট নয়। এসব কথা ও কাজের সবই ফাঁকা ও অর্থহীন।ফিলিস্তিনে যখন গণহত্যা চালানো হচ্ছে, ইসরায়েল যখন কারও কথায় পাত্তা না দিয়ে নির্বিচার শহরগুলো ধ্বংস করছে, তখন আরব দেশ গুলোকে অর্থপূর্ণভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

ইসরায়েল যখন দানবের মতো মানুষ হত্যা করে যাচ্ছে, তখন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষসহ পুরো আরব বিশ্বকে কুণ্ঠাহীনভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আরব বিশ্বের সব দেশ শুধু নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থ মাথায় রেখে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, কোনোভাবেই তারা নৈতিক অবস্থান থেকে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে না।

ইসরায়েল যেখানে তার ঔপনিবেশিক প্রকল্প এগিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে কাজ করছে, সেখানে আরব শাসকগোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থের বাইরে কিছু ভাবতে পারছে না এবং ফিলিস্তিনিদের বিষয়কে উপেক্ষা করে যাচ্ছে। আরব দেশগুলোর এই উন্মাসিকতার কারণ রয়েছে। যেমন: আরব নেতারা ইসরায়েলের সামরিক ক্ষমতাকে ভয় পান; বিশেষ করে ইসরায়েল কার্যত একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হওয়ায় তাঁদের ভয়টা বেশি।

ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ালে তা আরব রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থ রক্ষা করবে, এমনটি আরব নেতারা বিশ্বাস করেন না। উল্টো তাঁরা বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ালে সেটি আরব সেনাবাহিনীগুলোকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। এবং শাসকেরা কোনোভাবেই পশ্চিমা শক্তিগুলোকে খেপিয়ে তুলতে চান না।

এই শাসকেরা ভালো করেই বুঝতে পারেন, ইসরায়েল পশ্চিমাদের একটি সাম্রাজ্যবাদী সহচর। তাঁরা সব দিক হিসাব-নিকাশ করে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন, যেহেতু তাঁরা মার্কিন শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবেন না, যেহেতু পশ্চিমাদের তালে তাল মেলালে অনেক আর্থিক লাভ হয়, সেহেতু পশ্চিমাদের কথার বাইরে না গিয়ে চলাই সব দিক থেকে নিরাপদ। আসল ঘটনা হলো, পশ্চিমাদের অনুগ্রহ যারা পেয়ে থাকে, তারা সংখ্যায় খুবই কম।

মূলত অর্থনৈতিকভাবে অভিজাত একটি শ্রেণি এই সব সুবিধা পেয়ে থাকে। পশ্চিমা আর্থিক সুবিধার ছিটেফোঁটা হয়তো মধ্যবিত্তের কপালেও কালেভদ্রে জোটে, কিন্তু এই আরব অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ সেসব সুবিধা পায় না। ফলে যৌক্তিকভাবেই সংখ্যাগরিষ্ঠ আরব জনগণ ক্ষমতার কাছে থাকা অভিজাত গোষ্ঠীকে দুর্নীতিপরায়ণ মনে করে। ২০১১ সালে আরব বসন্তখ্যাত গণবিদ্রোহের মূল কারণ ছিল এটিই।

যদিও আরব শাসকদের অনেকেই প্রতিবাদকারীদের কয়েদখানায় বন্দি করে, নির্যাতন করে, হত্যা করে, নজরদারিতে নিয়ে নিজেদের শাসন টিকিয়ে রেখেছেন এবং বিদ্রোহ দমন করে আসছেন; কিন্তু এসব দিয়ে তাঁরা জনগণের বিপ্লবী চেতনাকে হারিয়ে দিতে পারেননি। ফলে একটু সুযোগ পেলেই জনগণ আবার বিদ্রোহী হয়ে উঠবে এবং ক্ষমতাসীনদের নামাতে রাস্তায় নেমে পড়বে।

যদিও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অভিজাত গোষ্ঠী এটিকে নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রয়োগের মাধ্যমে সামাল দেওয়ার মতো একটি সমস্যা বলে মনে করে, কিন্তু এটি একেবারেই স্বল্পমেয়াদি চিন্তাভাবনা। দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের কথা মাথায় রেখে এই জনক্ষোভ ভেতর থেকে প্রশমন করা উচিত।

আরব বিশ্বের সর্বস্তরের মানুষ নানা কারণে অকুণ্ঠভাবে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করে। তারা ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামকে নিজেদের মর্যাদা ও মুক্তির আন্দোলনের প্রতিফলন হিসেবে দেখে। যখন তারা আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রের মর্যাদা না পাওয়া গরিব ফিলিস্তিনিদের পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে দেখে, তখন তারা দারুণভাবে উদ্দীপ্ত হয়।

ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামী চেতনা আরব জনগণের মধ্যে তাদের স্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারী শাসনের আকাক্সক্ষাকে জাগিয়ে তোলে। তারা তখন প্রশ্ন তুলতে শুরু করে, কেন মিসর ও জর্ডানের সরকার গাজার ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা অবসানে সক্রিয় অবস্থান নিতে ব্যর্থ হচ্ছে; কেন সৌদি আরব তার তেল সরবরাহের সুবিধাকে ব্যবহার করে ইসরায়েলকে যুদ্ধে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিচ্ছে না। যদিও শাসকগোষ্ঠী তাদের জনগণকে সামষ্টিকভাবে তাদের শাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা থেকে ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়; কিন্তু দিন শেষে প্রশ্নগুলো জনগণের হৃদয়ের মধ্যে আটকে থাকে।

এই প্রশ্নগুলো আরব সম্প্রদায়ের তৃণমূল পর্যায়ে সার্বক্ষণিকভাবে আলোচিত হচ্ছে। তবু এই শাসকেরা এত মানুষের চাওয়ার বিপক্ষে দাঁড়ান শুধু পশ্চিমাদের স্বীকৃতি ও সহযোগিতার আশায়। সর্বগ্রাসী শাসকেরা কখনোই তাঁদের দ্বারা শাসিত জনগণের মুখোমুখি হতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। উল্টো তাদের তাঁরা ভয় পান। যদিও পশ্চিমাদের স্বীকৃতির জোরে এই শাসকেরা দীর্ঘদিন টিকে আছেন, কিন্তু সেই স্বীকৃতি বরাবরই নাজুক অবস্থায় থেকেছে।

এখন যদি এই শাসকেরা সরাসরি জনগণের মতামত ও আহ্বানে সাড়া দেন, তাহলে তাঁরা নিজ দেশের মানুষের কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হতে পারবেন। ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিরুদ্ধে শক্তভাবে দাঁড়ানোর মাধ্যমে তাঁরা জনগণের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন।

আসলে নিজ দেশের জনগণের সঙ্গে শাসকগোষ্ঠীর নিবিড় বন্ধনের একটা বড় সুযোগ করে দিয়েছে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম। আরব শাসকেরা যেদিন নিজ দেশের জনগণের সঙ্গে একীভূত হয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে পারবেন, সেদিনই মূলত তাঁরা প্রকৃত সার্বভৌম শাসকের মর্যাদা পাবেন।

তার আগে নয়।হামাস ও ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের প্রশ্নে ইরান একাত্ম হলেও এই মুহূর্তে সরাসরি তারা কোনো যুদ্ধে জড়ায়নি। তবে যা মনে হচ্ছে, ইসরায়েল ও তার নেতা নেতানিয়াহু বাধ্য করলে শেষ পর্যন্ত এ যুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেবে তুরস্ক, সৌদি আরব, মিসর,জর্দান ও অন্যরা। ফিলিস্তিনের মুক্তির প্রশ্নে মধ্যস্থতা করতে চীন, রাশিয়া, তুরস্ক ও সৌদি আরব প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু তার জন্য সর্বাগ্রে ফিলিস্তিন ব্যাপী একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন।

তারা সবাই এখন এটিই দাবি করে যাচ্ছে। কিন্তু তা শুনতে প্রস্তুত নন নেতানিয়াহু। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে কিভাবে থামতে বাধ্য করা যায়, সেটিই একটি বিরাট চিন্তার বিষয়। কারণ নেতানিয়াহুর কাছে জাতিসংঘসহ কারো কথার কোনো গুরুত্ব নেই। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথাও শুনছেন না তিনি। অথচ ইসরায়েলকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্থ ও অস্ত্র সাহায্য দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সে কারণে ক্রমে ক্রমে এখন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা ইসরায়েল সম্পর্কে তাদের সমর্থন ও মনোভাব পরিবর্তন করছে।

গণহত্যার পরিবর্তে ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়ে মাঠে নেমেছে একটি মার্কিন ইহুদি জনগোষ্ঠী। তারা ফিলিস্তিনের ভূমিগ্রাসের পরিবর্তে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সবার মতো তারাও মনে করে, দ্বিরাষ্ট্রের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই হবে বাস্তব উদ্যোগ, যা নেতানিয়াহু মানতে রাজি নন। সে কারণেই জো বাইডেনসহ বিশ্বের অনেকেই মনে করেন, এই মুহূর্তে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা ছাড়াও নেতানিয়াহুর অপসারণ প্রয়োজন।

চলমান গাজা যুদ্ধে হামাসের কাছে এবং বিশ্বজনমতের কাছে হেরে গেছেন নেতানিয়াহু। এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করলে ক্রমে ক্রমে ইসরায়েলই বিলুপ্ত হতে পারে। তত দিন পর্যন্ত চরম অশান্তি, অস্থিরতা ও নৈরাজ্যের মধ্যে অবস্থান করে ইসরায়েলবাসীর কী লাভ হবে? ইসরায়েলের অনেক ইহুদি এরই মধ্যে নিরাপত্তা ও শান্তির প্রশ্নে দেশ ছেড়েছে। সুতরাং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং এই দুটি রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই এখন অগ্রাধিকারের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে আমেরিকা যখন মধ্যপ্রাচ্যে কিছু করতে চেয়েছে, তখন সেটার বাস্তবায়নও হয়েছে। মিশর-ইসরায়েল শান্তিচুক্তি, জর্ডানের সঙ্গে চুক্তি এমনকি সাম্প্রতিককালে আব্রাহাম অ্যাকর্ড-এর সবগুলোর পেছনে আমেরিকার ভূমিকা আছে।

কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে আমেরিকার আগ্রহ আছে কিনা,এমন প্রশ্নে দুই যুগ আগে নাইন-ইলেভেনের পর আমেরিকার চোখ অসলো শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন থেকে সরে যায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে। সেটা শেষ হলে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ে ইরান, রাশিয়া, চীন নিয়ে।

কিন্তু এখন আমেরিকাকে আবারো মধ্যপ্রাচ্যে সক্রিয় হতে হচ্ছে। কারণ এখানে অবহেলা করলে এর ফল সবাইকেই ভোগ করতে হবে, কিছু সময় পর পর সংঘাত সামনে আসবে। আমেরিকা শান্তির উদ্যোগ নিলে হয়তো সেটা আশা দেখাতে পারে। কিন্তু এখন ইসরায়েল-গাজা সংকট যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে এগুচ্ছে, সেখানে আমেরিকা-ইসরায়েল কিংবা হামাস, শান্তির কথা কেউই বলছে না। সংকটটা এখানেই।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সেই চেয়ারম্যানকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং আরব বিশ্বের সংকীর্ণতা

আপডেট সময় ০৭:২১:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩

আরব-ইসরায়েলের মধ্যে ১৯৪৮ সালের যুদ্ধের পর থেকে ফিলিস্তিনে যে যুদ্ধ শুরু, সেটা চলছে এখনো। পঞ্চাশ বছর আগে ১৯৭৩ সালে তৃতীয় আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর আরব দেশগুলোর সঙ্গে আর কোন যুদ্ধ না হলেও ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব-সংঘাত বন্ধ হয়নি। যদিও সংঘাত বন্ধে শান্তির ফরমুলা হিসেবে বিভিন্ন সময় দুই রাষ্ট্র সমাধানের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সেটা আর বাস্তবে রূপ নেয়নি।

অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের মুক্তির প্রশ্নে গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে যে আকস্মিক ও দুঃসাহসী হামলা চালিয়েছে, তার জবাবে ইসরায়েল গত এক মাস গাজার অভ্যন্তরে নির্বিচারে হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এতে অভিনব টানেলভিত্তিক সমর কৌশল গ্রহণ করা হামাস বাহিনীর তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারেনি ইহুদিবাদী সেনাবাহিনী।

বরং ইহুদিবাদীরা এক অবশ্যম্ভাবী পরাজয়ের মুখে পড়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। হামাস ৭ অক্টোবর যে আক্রমণের সূচনা করেছে, সেটি হচ্ছে একটি সামরিক অভিযান। আর ইহুদিবাদী ইসরায়েল গত এক মাসব্যাপী যা করেছে, তা হচ্ছে একটি নারকীয় গণহত্যা। গাজার নিরীহ ও নিরস্ত্র নারী, শিশু ও বৃদ্ধ জনগোষ্ঠীকে নির্বিচারে হত্যা করা এবং তাদের আশ্রয়স্থল কিংবা অবকাঠামোগত ব্যবস্থাকে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে উড়িয়ে দেওয়া-তাতে ইহুদিবাদীরা তাদের হামাসের বিরুদ্ধে ঘোষিত যুদ্ধে কোনো সাফল্য পায়নি।

বরং একদিকে অর্জন করেছে এ যুগের নিকৃষ্টতম গণহত্যা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ, অন্যদিকে এই তথাকথিত যুদ্ধে পরাজয়ের গ্লানি। হামাসের চলমান দুঃসাহসী ও অভিনব সামরিক অভিযানকে বিশ্বব্যাপী বলা হচ্ছে এক কাক্সিক্ষত মুক্তিযুদ্ধ।

অন্যদিকে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের বর্তমান সরকার ও সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় বশংবদদের সমর্থন ও প্রকাশ্য মদদে যা করছে, তার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে আরব দেশগুলোতে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। তবে শুধু মুখের বুলি যথেষ্ট নয়। জাতিসংঘের প্রস্তাব যথেষ্ট নয়।

আনুষ্ঠানিক নিন্দা যথেষ্ট নয়। সামান্য পরিমাণ ত্রাণ পাঠানো যথেষ্ট নয়। এসব কথা ও কাজের সবই ফাঁকা ও অর্থহীন।ফিলিস্তিনে যখন গণহত্যা চালানো হচ্ছে, ইসরায়েল যখন কারও কথায় পাত্তা না দিয়ে নির্বিচার শহরগুলো ধ্বংস করছে, তখন আরব দেশ গুলোকে অর্থপূর্ণভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

ইসরায়েল যখন দানবের মতো মানুষ হত্যা করে যাচ্ছে, তখন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষসহ পুরো আরব বিশ্বকে কুণ্ঠাহীনভাবে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আরব বিশ্বের সব দেশ শুধু নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থ মাথায় রেখে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, কোনোভাবেই তারা নৈতিক অবস্থান থেকে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে না।

ইসরায়েল যেখানে তার ঔপনিবেশিক প্রকল্প এগিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে কাজ করছে, সেখানে আরব শাসকগোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থের বাইরে কিছু ভাবতে পারছে না এবং ফিলিস্তিনিদের বিষয়কে উপেক্ষা করে যাচ্ছে। আরব দেশগুলোর এই উন্মাসিকতার কারণ রয়েছে। যেমন: আরব নেতারা ইসরায়েলের সামরিক ক্ষমতাকে ভয় পান; বিশেষ করে ইসরায়েল কার্যত একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হওয়ায় তাঁদের ভয়টা বেশি।

ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ালে তা আরব রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থ রক্ষা করবে, এমনটি আরব নেতারা বিশ্বাস করেন না। উল্টো তাঁরা বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ালে সেটি আরব সেনাবাহিনীগুলোকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। এবং শাসকেরা কোনোভাবেই পশ্চিমা শক্তিগুলোকে খেপিয়ে তুলতে চান না।

এই শাসকেরা ভালো করেই বুঝতে পারেন, ইসরায়েল পশ্চিমাদের একটি সাম্রাজ্যবাদী সহচর। তাঁরা সব দিক হিসাব-নিকাশ করে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন, যেহেতু তাঁরা মার্কিন শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবেন না, যেহেতু পশ্চিমাদের তালে তাল মেলালে অনেক আর্থিক লাভ হয়, সেহেতু পশ্চিমাদের কথার বাইরে না গিয়ে চলাই সব দিক থেকে নিরাপদ। আসল ঘটনা হলো, পশ্চিমাদের অনুগ্রহ যারা পেয়ে থাকে, তারা সংখ্যায় খুবই কম।

মূলত অর্থনৈতিকভাবে অভিজাত একটি শ্রেণি এই সব সুবিধা পেয়ে থাকে। পশ্চিমা আর্থিক সুবিধার ছিটেফোঁটা হয়তো মধ্যবিত্তের কপালেও কালেভদ্রে জোটে, কিন্তু এই আরব অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ সেসব সুবিধা পায় না। ফলে যৌক্তিকভাবেই সংখ্যাগরিষ্ঠ আরব জনগণ ক্ষমতার কাছে থাকা অভিজাত গোষ্ঠীকে দুর্নীতিপরায়ণ মনে করে। ২০১১ সালে আরব বসন্তখ্যাত গণবিদ্রোহের মূল কারণ ছিল এটিই।

যদিও আরব শাসকদের অনেকেই প্রতিবাদকারীদের কয়েদখানায় বন্দি করে, নির্যাতন করে, হত্যা করে, নজরদারিতে নিয়ে নিজেদের শাসন টিকিয়ে রেখেছেন এবং বিদ্রোহ দমন করে আসছেন; কিন্তু এসব দিয়ে তাঁরা জনগণের বিপ্লবী চেতনাকে হারিয়ে দিতে পারেননি। ফলে একটু সুযোগ পেলেই জনগণ আবার বিদ্রোহী হয়ে উঠবে এবং ক্ষমতাসীনদের নামাতে রাস্তায় নেমে পড়বে।

যদিও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অভিজাত গোষ্ঠী এটিকে নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রয়োগের মাধ্যমে সামাল দেওয়ার মতো একটি সমস্যা বলে মনে করে, কিন্তু এটি একেবারেই স্বল্পমেয়াদি চিন্তাভাবনা। দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের কথা মাথায় রেখে এই জনক্ষোভ ভেতর থেকে প্রশমন করা উচিত।

আরব বিশ্বের সর্বস্তরের মানুষ নানা কারণে অকুণ্ঠভাবে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করে। তারা ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামকে নিজেদের মর্যাদা ও মুক্তির আন্দোলনের প্রতিফলন হিসেবে দেখে। যখন তারা আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রের মর্যাদা না পাওয়া গরিব ফিলিস্তিনিদের পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে দেখে, তখন তারা দারুণভাবে উদ্দীপ্ত হয়।

ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামী চেতনা আরব জনগণের মধ্যে তাদের স্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারী শাসনের আকাক্সক্ষাকে জাগিয়ে তোলে। তারা তখন প্রশ্ন তুলতে শুরু করে, কেন মিসর ও জর্ডানের সরকার গাজার ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা অবসানে সক্রিয় অবস্থান নিতে ব্যর্থ হচ্ছে; কেন সৌদি আরব তার তেল সরবরাহের সুবিধাকে ব্যবহার করে ইসরায়েলকে যুদ্ধে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিচ্ছে না। যদিও শাসকগোষ্ঠী তাদের জনগণকে সামষ্টিকভাবে তাদের শাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা থেকে ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়; কিন্তু দিন শেষে প্রশ্নগুলো জনগণের হৃদয়ের মধ্যে আটকে থাকে।

এই প্রশ্নগুলো আরব সম্প্রদায়ের তৃণমূল পর্যায়ে সার্বক্ষণিকভাবে আলোচিত হচ্ছে। তবু এই শাসকেরা এত মানুষের চাওয়ার বিপক্ষে দাঁড়ান শুধু পশ্চিমাদের স্বীকৃতি ও সহযোগিতার আশায়। সর্বগ্রাসী শাসকেরা কখনোই তাঁদের দ্বারা শাসিত জনগণের মুখোমুখি হতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। উল্টো তাদের তাঁরা ভয় পান। যদিও পশ্চিমাদের স্বীকৃতির জোরে এই শাসকেরা দীর্ঘদিন টিকে আছেন, কিন্তু সেই স্বীকৃতি বরাবরই নাজুক অবস্থায় থেকেছে।

এখন যদি এই শাসকেরা সরাসরি জনগণের মতামত ও আহ্বানে সাড়া দেন, তাহলে তাঁরা নিজ দেশের মানুষের কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হতে পারবেন। ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিরুদ্ধে শক্তভাবে দাঁড়ানোর মাধ্যমে তাঁরা জনগণের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন।

আসলে নিজ দেশের জনগণের সঙ্গে শাসকগোষ্ঠীর নিবিড় বন্ধনের একটা বড় সুযোগ করে দিয়েছে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম। আরব শাসকেরা যেদিন নিজ দেশের জনগণের সঙ্গে একীভূত হয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে পারবেন, সেদিনই মূলত তাঁরা প্রকৃত সার্বভৌম শাসকের মর্যাদা পাবেন।

তার আগে নয়।হামাস ও ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের প্রশ্নে ইরান একাত্ম হলেও এই মুহূর্তে সরাসরি তারা কোনো যুদ্ধে জড়ায়নি। তবে যা মনে হচ্ছে, ইসরায়েল ও তার নেতা নেতানিয়াহু বাধ্য করলে শেষ পর্যন্ত এ যুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেবে তুরস্ক, সৌদি আরব, মিসর,জর্দান ও অন্যরা। ফিলিস্তিনের মুক্তির প্রশ্নে মধ্যস্থতা করতে চীন, রাশিয়া, তুরস্ক ও সৌদি আরব প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু তার জন্য সর্বাগ্রে ফিলিস্তিন ব্যাপী একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন।

তারা সবাই এখন এটিই দাবি করে যাচ্ছে। কিন্তু তা শুনতে প্রস্তুত নন নেতানিয়াহু। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে কিভাবে থামতে বাধ্য করা যায়, সেটিই একটি বিরাট চিন্তার বিষয়। কারণ নেতানিয়াহুর কাছে জাতিসংঘসহ কারো কথার কোনো গুরুত্ব নেই। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথাও শুনছেন না তিনি। অথচ ইসরায়েলকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্থ ও অস্ত্র সাহায্য দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সে কারণে ক্রমে ক্রমে এখন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা ইসরায়েল সম্পর্কে তাদের সমর্থন ও মনোভাব পরিবর্তন করছে।

গণহত্যার পরিবর্তে ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়ে মাঠে নেমেছে একটি মার্কিন ইহুদি জনগোষ্ঠী। তারা ফিলিস্তিনের ভূমিগ্রাসের পরিবর্তে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সবার মতো তারাও মনে করে, দ্বিরাষ্ট্রের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই হবে বাস্তব উদ্যোগ, যা নেতানিয়াহু মানতে রাজি নন। সে কারণেই জো বাইডেনসহ বিশ্বের অনেকেই মনে করেন, এই মুহূর্তে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা ছাড়াও নেতানিয়াহুর অপসারণ প্রয়োজন।

চলমান গাজা যুদ্ধে হামাসের কাছে এবং বিশ্বজনমতের কাছে হেরে গেছেন নেতানিয়াহু। এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করলে ক্রমে ক্রমে ইসরায়েলই বিলুপ্ত হতে পারে। তত দিন পর্যন্ত চরম অশান্তি, অস্থিরতা ও নৈরাজ্যের মধ্যে অবস্থান করে ইসরায়েলবাসীর কী লাভ হবে? ইসরায়েলের অনেক ইহুদি এরই মধ্যে নিরাপত্তা ও শান্তির প্রশ্নে দেশ ছেড়েছে। সুতরাং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং এই দুটি রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই এখন অগ্রাধিকারের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে আমেরিকা যখন মধ্যপ্রাচ্যে কিছু করতে চেয়েছে, তখন সেটার বাস্তবায়নও হয়েছে। মিশর-ইসরায়েল শান্তিচুক্তি, জর্ডানের সঙ্গে চুক্তি এমনকি সাম্প্রতিককালে আব্রাহাম অ্যাকর্ড-এর সবগুলোর পেছনে আমেরিকার ভূমিকা আছে।

কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে আমেরিকার আগ্রহ আছে কিনা,এমন প্রশ্নে দুই যুগ আগে নাইন-ইলেভেনের পর আমেরিকার চোখ অসলো শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন থেকে সরে যায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে। সেটা শেষ হলে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ে ইরান, রাশিয়া, চীন নিয়ে।

কিন্তু এখন আমেরিকাকে আবারো মধ্যপ্রাচ্যে সক্রিয় হতে হচ্ছে। কারণ এখানে অবহেলা করলে এর ফল সবাইকেই ভোগ করতে হবে, কিছু সময় পর পর সংঘাত সামনে আসবে। আমেরিকা শান্তির উদ্যোগ নিলে হয়তো সেটা আশা দেখাতে পারে। কিন্তু এখন ইসরায়েল-গাজা সংকট যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে এগুচ্ছে, সেখানে আমেরিকা-ইসরায়েল কিংবা হামাস, শান্তির কথা কেউই বলছে না। সংকটটা এখানেই।