ঢাকা ১২:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক বন্ধুকে খুশি করতে অন্যের বিরাগভাজন হতে পারি না

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৩৬:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকায় মিয়ানমারের সেনা নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগে বাংলাদেশ সতর্কতা অবলম্বন করে বলে জানিয়েছেন- সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীতে এক সেমিনারে সেনাপ্রধান বলেন, মিয়ানমারের নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। কিন্তু আপনারা জানেন, মিয়ানমারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাটা নিজেদের ঝুঁকিতে ফেলার মতো। কারণ, সব দেশই আমাদের বন্ধু। কাজেই একটি বন্ধুরাষ্ট্রকে খুশি করতে গিয়ে অন্য রাষ্ট্রের বিরাগভাজন হতে পারি না। এই বাস্তবতা আমাদের বিবেচনায় রাখতে হয়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) প্রতিরক্ষা কূটনীতিবিষয়ক ওই সেমিনারের আয়োজন করেছিল। ইস্কাটনস্থ বিস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন- সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। বিস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এএফএম গওসোল আযম সরকারের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

৩৩ মিনিটের বক্তব্যে সেনাপ্রধান নিজেদের সক্ষমতা এবং প্রতিরক্ষা কূটনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন। নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, অভিপ্রায় হঠাৎ করে বদলে যেতে পারে। কিন্তু সক্ষমতা হঠাৎ করে বদলায় না। আজ একজন বন্ধু আছে, কাল সে বন্ধু না-ও থাকতে পারে। জাতীয় স্বার্থ ও মাতৃভূমি সুরক্ষার জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে। জাতির পিতা প্রণীত পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’- এমনটি স্মরণ করে তিনি বলেন, সামরিক বাহিনী পররাষ্ট্রনীতির উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সবকিছু করছে। সেনাপ্রধান বলেন, সামরিক বাহিনীর মূল কাজ হচ্ছে- দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। আমরা সেটি কখনো ভুলি না। আমরা সব সময় এর জন্য তৈরি। সেনা প্রধান বলেন, এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সরকারের সব সংস্থাই দেশের স্বার্থের জন্য কাজ করে। সুযোগ খুঁজে বের করা এবং সহায়ক পরিবেশে কাজ করা হচ্ছে সবচেয়ে ভালো বিষয়। একা একা সফলতা অর্জন করা অসম্ভব। কীভাবে সবার সঙ্গে সহযোগিতা করা যায়, সেটি হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের স্বার্থ ও কৌশলের জন্য সামরিক কৌশল দরকার এবং এটির মাধ্যমে বিভিন্ন ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের অবস্থান ঠিক করি। বিচ্ছিন্নভাবে এটি অর্জন করার সুযোগ নেই। মাঝে-মধ্যে আমাদের তাই ভাবনা আসে, কে নেতৃত্ব দেবে বা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কার হাতে থাকবে? এটি কখনো কখনো সমস্যা তৈরি করে। সরকারি কাজ সমন্বয়ের জন্য একটি সংস্থার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, অনেক বিষয় আছে, যেটি আমরা শুরু করেছিলাম কিন্তু শেষ করতে পারিনি। কারণ, পরবর্তীতে সেটি আমাদের হাতে থাকেনি।

যখনই আমি ব্যবসা খাতের জন্য একটি সম্ভাবনা খুঁজে বের করলাম, সেটি পরবর্তীতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে চলে যায়। কাজেই এখানে সমন্বয়ের যে প্রস্তাব এসেছে, সেটি আমি সমর্থন করি এবং মনে করি, একটি সংস্থা দরকার, যেটি সমন্বিত উদ্যোগ নিশ্চিত করবে যার মাধ্যমে যেটি অর্জন করা হয়েছে, সেটি হারিয়ে যাবে না এবং এর ভবিষ্যৎ কার্যক্রম ঠিক করবে। এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে প্রিমিয়াম টিম বলে মনে করা হয়। জাতিসংঘের যেকোনো শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ এখন আলাদা সম্মানের জায়গা দখল করে আছে। শান্তিরক্ষা মিশনে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে যখন মধ্য আফ্রিকায় মিশনে গেলাম, তার এক মাস পর অর্থাৎ অক্টোবরে বড় রকমের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিলাম। শুধু আমার গাড়ি বুলেট প্রুফ হওয়ার কারণে সেদিন জানে বেঁচে ফিরতে পেরেছি। সেদিন আমার আশপাশের অনেক সৈন্য আহত হয়েছিল। এভাবেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জীবন বাজি রেখে শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করে দেশের জন্য সুনাম কুড়িয়ে এনেছে। বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তার সর্বোচ্চটুকু করছে জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তি মিশনে যাওয়া সেনারা বাংলাদেশের একএকজন রাষ্ট্রদূত। তাদের কাজে যাতে দেশের বদনাম না হয় বরং বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল হয়- এমনটা বরাবরই তাদের স্মরণে রাখতে বলা হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অর্জনে অবদান রাখতে এবং দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবকিছু করছে। তিনি বলেন, মাতৃভূমিকে রক্ষা করা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য এবং আমরা তার জন্য প্রস্তুত আছি। জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রেখে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে সেনাপ্রধান বলেন, কূটনীতি যেকোনো ধরনের জাতীয় স্বার্থ অর্জনের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। বেসামরিক শক্তির সহায়তায় সেনাবাহিনী কীভাবে দেশে গঠনমূলক কর্মকাণ্ড, দেশ-বিদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, যেখানেই সুযোগ আছে, তা প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ, আমরা সুযোগ গ্রহণ করি এবং বাংলাদেশের স্বার্থে সবকিছু করি। সামরিক কূটনীতির কথা বলতে গিয়ে জেনারেল শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আরও সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ করে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমরা জানি কীভাবে এটা করতে হয়। কিন্তু আমাদের এটা করার সামর্থ্য থাকা উচিত। সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কেবল যুদ্ধে লড়াই করাই শেখে না, বরং জাতীয় স্বার্থে কীভাবে যুদ্ধ প্রতিরোধ বা এড়াতে হয় তা-ও জানে। আমরা সঠিক পথেই আছি এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবো না।

অনুষ্ঠানে চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, অনেকের হয়তো প্রতিরক্ষা কূটনীতি নিয়ে ভুল ধারণা আছে কিন্তু আমাদের কূটনীতিকেরা এর প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি খুব ভালোমতো বোঝেন। বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগে বিশেষত: প্রতিরক্ষা কূটনীতিতে অত্যন্ত ব্যালেন্স অবস্থানে রয়েছে বলে জানান তিনি। বিস’র চেয়ারম্যান এএফএম গওসোল আযম সরকার বলেন, বৃহৎ পররাষ্ট্রনীতির পরিসরে প্রতিরক্ষা কূটনীতি কাজ করে। বিস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খানের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সেমিনারে চারটি বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে কেন নিষেধাজ্ঞা?

এক বন্ধুকে খুশি করতে অন্যের বিরাগভাজন হতে পারি না

আপডেট সময় ০৮:৩৬:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকায় মিয়ানমারের সেনা নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগে বাংলাদেশ সতর্কতা অবলম্বন করে বলে জানিয়েছেন- সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীতে এক সেমিনারে সেনাপ্রধান বলেন, মিয়ানমারের নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। কিন্তু আপনারা জানেন, মিয়ানমারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাটা নিজেদের ঝুঁকিতে ফেলার মতো। কারণ, সব দেশই আমাদের বন্ধু। কাজেই একটি বন্ধুরাষ্ট্রকে খুশি করতে গিয়ে অন্য রাষ্ট্রের বিরাগভাজন হতে পারি না। এই বাস্তবতা আমাদের বিবেচনায় রাখতে হয়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) প্রতিরক্ষা কূটনীতিবিষয়ক ওই সেমিনারের আয়োজন করেছিল। ইস্কাটনস্থ বিস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন- সেনাপ্রধান এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। বিস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এএফএম গওসোল আযম সরকারের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

৩৩ মিনিটের বক্তব্যে সেনাপ্রধান নিজেদের সক্ষমতা এবং প্রতিরক্ষা কূটনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন। নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, অভিপ্রায় হঠাৎ করে বদলে যেতে পারে। কিন্তু সক্ষমতা হঠাৎ করে বদলায় না। আজ একজন বন্ধু আছে, কাল সে বন্ধু না-ও থাকতে পারে। জাতীয় স্বার্থ ও মাতৃভূমি সুরক্ষার জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে। জাতির পিতা প্রণীত পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’- এমনটি স্মরণ করে তিনি বলেন, সামরিক বাহিনী পররাষ্ট্রনীতির উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সবকিছু করছে। সেনাপ্রধান বলেন, সামরিক বাহিনীর মূল কাজ হচ্ছে- দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। আমরা সেটি কখনো ভুলি না। আমরা সব সময় এর জন্য তৈরি। সেনা প্রধান বলেন, এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সরকারের সব সংস্থাই দেশের স্বার্থের জন্য কাজ করে। সুযোগ খুঁজে বের করা এবং সহায়ক পরিবেশে কাজ করা হচ্ছে সবচেয়ে ভালো বিষয়। একা একা সফলতা অর্জন করা অসম্ভব। কীভাবে সবার সঙ্গে সহযোগিতা করা যায়, সেটি হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের স্বার্থ ও কৌশলের জন্য সামরিক কৌশল দরকার এবং এটির মাধ্যমে বিভিন্ন ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের অবস্থান ঠিক করি। বিচ্ছিন্নভাবে এটি অর্জন করার সুযোগ নেই। মাঝে-মধ্যে আমাদের তাই ভাবনা আসে, কে নেতৃত্ব দেবে বা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কার হাতে থাকবে? এটি কখনো কখনো সমস্যা তৈরি করে। সরকারি কাজ সমন্বয়ের জন্য একটি সংস্থার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, অনেক বিষয় আছে, যেটি আমরা শুরু করেছিলাম কিন্তু শেষ করতে পারিনি। কারণ, পরবর্তীতে সেটি আমাদের হাতে থাকেনি।

যখনই আমি ব্যবসা খাতের জন্য একটি সম্ভাবনা খুঁজে বের করলাম, সেটি পরবর্তীতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে চলে যায়। কাজেই এখানে সমন্বয়ের যে প্রস্তাব এসেছে, সেটি আমি সমর্থন করি এবং মনে করি, একটি সংস্থা দরকার, যেটি সমন্বিত উদ্যোগ নিশ্চিত করবে যার মাধ্যমে যেটি অর্জন করা হয়েছে, সেটি হারিয়ে যাবে না এবং এর ভবিষ্যৎ কার্যক্রম ঠিক করবে। এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে প্রিমিয়াম টিম বলে মনে করা হয়। জাতিসংঘের যেকোনো শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ এখন আলাদা সম্মানের জায়গা দখল করে আছে। শান্তিরক্ষা মিশনে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে যখন মধ্য আফ্রিকায় মিশনে গেলাম, তার এক মাস পর অর্থাৎ অক্টোবরে বড় রকমের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিলাম। শুধু আমার গাড়ি বুলেট প্রুফ হওয়ার কারণে সেদিন জানে বেঁচে ফিরতে পেরেছি। সেদিন আমার আশপাশের অনেক সৈন্য আহত হয়েছিল। এভাবেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জীবন বাজি রেখে শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করে দেশের জন্য সুনাম কুড়িয়ে এনেছে। বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তার সর্বোচ্চটুকু করছে জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তি মিশনে যাওয়া সেনারা বাংলাদেশের একএকজন রাষ্ট্রদূত। তাদের কাজে যাতে দেশের বদনাম না হয় বরং বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল হয়- এমনটা বরাবরই তাদের স্মরণে রাখতে বলা হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অর্জনে অবদান রাখতে এবং দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবকিছু করছে। তিনি বলেন, মাতৃভূমিকে রক্ষা করা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য এবং আমরা তার জন্য প্রস্তুত আছি। জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রেখে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে সেনাপ্রধান বলেন, কূটনীতি যেকোনো ধরনের জাতীয় স্বার্থ অর্জনের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। বেসামরিক শক্তির সহায়তায় সেনাবাহিনী কীভাবে দেশে গঠনমূলক কর্মকাণ্ড, দেশ-বিদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, যেখানেই সুযোগ আছে, তা প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ, আমরা সুযোগ গ্রহণ করি এবং বাংলাদেশের স্বার্থে সবকিছু করি। সামরিক কূটনীতির কথা বলতে গিয়ে জেনারেল শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আরও সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ করে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমরা জানি কীভাবে এটা করতে হয়। কিন্তু আমাদের এটা করার সামর্থ্য থাকা উচিত। সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কেবল যুদ্ধে লড়াই করাই শেখে না, বরং জাতীয় স্বার্থে কীভাবে যুদ্ধ প্রতিরোধ বা এড়াতে হয় তা-ও জানে। আমরা সঠিক পথেই আছি এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবো না।

অনুষ্ঠানে চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, অনেকের হয়তো প্রতিরক্ষা কূটনীতি নিয়ে ভুল ধারণা আছে কিন্তু আমাদের কূটনীতিকেরা এর প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি খুব ভালোমতো বোঝেন। বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগে বিশেষত: প্রতিরক্ষা কূটনীতিতে অত্যন্ত ব্যালেন্স অবস্থানে রয়েছে বলে জানান তিনি। বিস’র চেয়ারম্যান এএফএম গওসোল আযম সরকার বলেন, বৃহৎ পররাষ্ট্রনীতির পরিসরে প্রতিরক্ষা কূটনীতি কাজ করে। বিস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খানের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সেমিনারে চারটি বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়।