ঢাকা ১০:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আক্রান্ত হলে জবাব দিতে প্রস্তুত ইরানের সামরিক বাহিনী

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:৩৮:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
  • ৩৩ বার পড়া হয়েছে

ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। অন্যদিকে ইরানের ওপর ইসরাইলের পাল্টা হামলার আশঙ্কা এখনো কাটেনি। ওদিকে ইসরাইলের যেকোনো ধরনের হামলা মোকাবিলায় ইরানের সামরিক বাহিনী প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তারা। ইসরাইলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারভি হ্যালেভি সোমবার বলেছেন, হামলার জবাব না দিয়ে ইরানকে ছেড়ে দেয়া হবে না। কিন্তু তার এই হুমকির পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরান। বার বার তারা হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, আক্রান্ত হলে তাদেরকে কঠোর জবাব দেয়া হবে। বুধবার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইরানের নৌবাহিনীর একজন কমান্ডার বলেছেন, লোহিত সাগরে ইরানের বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে নিরাপত্তা দিচ্ছেন তারা। বিশেষজ্ঞরা এবং পশ্চিমা নেতারা ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন ইসরাইল যদি ইরানে হামলা করে তাহলে তা থেকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। এ আশঙ্কায় ইসরাইলকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা।

কিন্তু ইরানকে শায়েস্তা করতে কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এ উদ্যোগে ইরানের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। অনলাইন হারেৎজ বলছে, ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে আরব আল আরামশে শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে লেবাননের যোদ্ধাগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ড্রোন হামলা করেছে। তাতে কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ড করপোরেশন সিরিয়া জুড়ে তাদের বিভিন্ন স্থাপনায় জরুরি ব্যবস্থা নিয়েছে। সিবিএসের রিপোর্টে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশা করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার ইসরাইলি জবাব হবে সীমিত। সামনের কয়েকদিনের মধ্যে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন কর্মসূচিকে টার্গেট করে নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।

ইসরাইলে ইরানের হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ইসরাইল বলেছে, তারা ইরানে পাল্টা হামলা করবে। হামলার বিভিন্ন বিকল্প নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা বৈঠক করছিল। ইরানের সশস্ত্র দিবস উপলক্ষে বুধবার তেহরানে এক সামরিক প্যারেডে অংশ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি বলেছেন, ??আমাদের মাটিতে ইহুদিবাদী ইসরাইলের যে কোনো ধরনের হামলার কঠোর জবাব দেয়া হবে। একই অনুষ্ঠানে ইরানের বিমান বাহিনীর কমান্ডার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরানের হাতে থাকা রাশিয়ার তৈরি সুখোই-২৪ যুদ্ধবিমানসহ অন্যান্য বিমান ইসরাইলি হামলার  মোকাবিলা করার জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে। কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার  জেনারেল আমির ভাহেদি বলেন, আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং  বোমারু বিমানসহ সব ক্ষেত্রেই পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা যেকোনো ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত।

ইরানের ভেতরে দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ঘাঁটি কিংবা পারমাণবিক গবেষণা  কেন্দ্রগুলোতে সরাসরি হামলা চালাতে পারে ইসরাইল। এছাড়া ইরানের বাইরেও লক্ষ্যবস্তু রয়েছে। দেশটির আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানি বলেছেন, ইরানের নৌবাহিনী তাদের বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লোহিত সাগরে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, নৌবাহিনী ইরানের বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লোহিত সাগরে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি মিশন পরিচালনা করছে এবং আমাদের জামারান ফ্রিগেট এডেন উপসাগরে উপস্থিত।
ওদিকে ইরানের বিরুদ্ধে কয়েকদিনের মধ্যেই নিষেধাজ্ঞা আসছে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, তার ব্লক এ নিয়ে কাজ করছে। উল্লেখ্য, তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরাইল। ইরানের এসব কর্মসূচির বিরুদ্ধে জাতিসংঘ যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অক্টোবরে। এই নিষেধাজ্ঞার অধীনে ছিল ইরানের সীমিত পরিসরে পারমাণবিক কর্মসূচি। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও বৃটেন ওই নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে কেন নিষেধাজ্ঞা?

আক্রান্ত হলে জবাব দিতে প্রস্তুত ইরানের সামরিক বাহিনী

আপডেট সময় ০৩:৩৮:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। অন্যদিকে ইরানের ওপর ইসরাইলের পাল্টা হামলার আশঙ্কা এখনো কাটেনি। ওদিকে ইসরাইলের যেকোনো ধরনের হামলা মোকাবিলায় ইরানের সামরিক বাহিনী প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তারা। ইসরাইলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারভি হ্যালেভি সোমবার বলেছেন, হামলার জবাব না দিয়ে ইরানকে ছেড়ে দেয়া হবে না। কিন্তু তার এই হুমকির পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরান। বার বার তারা হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, আক্রান্ত হলে তাদেরকে কঠোর জবাব দেয়া হবে। বুধবার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইরানের নৌবাহিনীর একজন কমান্ডার বলেছেন, লোহিত সাগরে ইরানের বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে নিরাপত্তা দিচ্ছেন তারা। বিশেষজ্ঞরা এবং পশ্চিমা নেতারা ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন ইসরাইল যদি ইরানে হামলা করে তাহলে তা থেকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। এ আশঙ্কায় ইসরাইলকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা।

কিন্তু ইরানকে শায়েস্তা করতে কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এ উদ্যোগে ইরানের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। অনলাইন হারেৎজ বলছে, ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে আরব আল আরামশে শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে লেবাননের যোদ্ধাগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ড্রোন হামলা করেছে। তাতে কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ড করপোরেশন সিরিয়া জুড়ে তাদের বিভিন্ন স্থাপনায় জরুরি ব্যবস্থা নিয়েছে। সিবিএসের রিপোর্টে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশা করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার ইসরাইলি জবাব হবে সীমিত। সামনের কয়েকদিনের মধ্যে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন কর্মসূচিকে টার্গেট করে নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।

ইসরাইলে ইরানের হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ইসরাইল বলেছে, তারা ইরানে পাল্টা হামলা করবে। হামলার বিভিন্ন বিকল্প নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা বৈঠক করছিল। ইরানের সশস্ত্র দিবস উপলক্ষে বুধবার তেহরানে এক সামরিক প্যারেডে অংশ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি বলেছেন, ??আমাদের মাটিতে ইহুদিবাদী ইসরাইলের যে কোনো ধরনের হামলার কঠোর জবাব দেয়া হবে। একই অনুষ্ঠানে ইরানের বিমান বাহিনীর কমান্ডার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরানের হাতে থাকা রাশিয়ার তৈরি সুখোই-২৪ যুদ্ধবিমানসহ অন্যান্য বিমান ইসরাইলি হামলার  মোকাবিলা করার জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে। কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার  জেনারেল আমির ভাহেদি বলেন, আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং  বোমারু বিমানসহ সব ক্ষেত্রেই পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা যেকোনো ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত।

ইরানের ভেতরে দেশটির বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ঘাঁটি কিংবা পারমাণবিক গবেষণা  কেন্দ্রগুলোতে সরাসরি হামলা চালাতে পারে ইসরাইল। এছাড়া ইরানের বাইরেও লক্ষ্যবস্তু রয়েছে। দেশটির আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানি বলেছেন, ইরানের নৌবাহিনী তাদের বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লোহিত সাগরে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, নৌবাহিনী ইরানের বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লোহিত সাগরে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি মিশন পরিচালনা করছে এবং আমাদের জামারান ফ্রিগেট এডেন উপসাগরে উপস্থিত।
ওদিকে ইরানের বিরুদ্ধে কয়েকদিনের মধ্যেই নিষেধাজ্ঞা আসছে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, তার ব্লক এ নিয়ে কাজ করছে। উল্লেখ্য, তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরাইল। ইরানের এসব কর্মসূচির বিরুদ্ধে জাতিসংঘ যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অক্টোবরে। এই নিষেধাজ্ঞার অধীনে ছিল ইরানের সীমিত পরিসরে পারমাণবিক কর্মসূচি। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও বৃটেন ওই নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে।