মাসব্যাপী ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার সাপ্তাহিক ছুটির শেষ শুক্রবার ক্রেতা দর্শনার্থীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। এদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদীর আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সের লোকজনকে মেলায় আসতে দেখা যায়। শেষ মুহূর্তে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বেচাকেনা অনেকটা বেশি হওয়ায় খুশি মেলার ব্যবসায়ী ও দোকানদাররা।
এদিকে, অন্যান্য বছরের তুলনায় সাপ্তাহিক কর্মদিবসে তেমন লোকসমাগম ও আশানুরূপ বেচাকেনা না হওয়ায় দু’দফায় বাণিজ্যমেলা ব্যবসায়ী সমিতি ও মেলার গেট ইজারা কর্তৃপক্ষ মেলা নির্ধারিত সময় থেকে আরও ৫ দিন সময় বাড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। তবে আগামী ২৯শে ফেব্রুয়ারি পূর্বাচল বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল মেলা। এ ছাড়া চট্টগ্রামে শুরু হয়ে গেছে দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। সে কারণে মেলার সময় বাড়ানো যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।
সরজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত মেলায় প্রায় ৭৫ হাজার ক্রেতা-দর্শনার্থী প্রবেশ করেছেন। মেলায় পুরুষের চেয়ে নারী ক্রেতা দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি। ব্যবসায়ীরা শেষের দিকে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে ১০-৫৩ শতাংশ ছাড় দিয়েছেন। শেষ মুহূর্তে বাকি কয়েকদিন বেচাকেনা বাড়বে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। মেলায় দর্শনার্থীর চেয়ে ক্রেতার সংখ্যা বেশি হওয়ায় অন্যান্য দিনের চেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানদাররা।
কুমিল্লা থেকে আসা দর্শনার্থী আবু জাফর বলেন, মেলায় প্রবেশের প্রধান সড়কে কিছুটা যানজটের কারণে অনেকটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
ডেমরা থেকে আসা মামুন বলেন, রাজধানীতে যখন মেলা হতো সেখানে ছোট পরিসরে হতো। পূর্বাচলে স্থায়ী ভেন্যুতে মেলা বসায় পরিবেশ অরেকটা ভালো। ঘুরাফেরা ও কেনাকাটা করতে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি। টঙ্গী থেকে আসা পারভেজ ভূঁইয়া বলেন, মেলায় পণ্য সামগ্রীর দাম বাইরে থেকে কিছুটা বেশি। তবে বাকি পরিবেশ ভালো।
মেলার গেট ইজারাদার ছালাউদ্দিন ভূঁইয়া জানান, মেলা নির্দিষ্ট সময়ে না বসায় অন্যান্য বছরের মতো জমে ওঠেনি। তাছাড়া প্রথম শুক্রবার জাতীয় ম্যারাথন দৌড়। এদিকে টানা শৈত্যপ্রবাহ, বিশ্ব ইজতেমা, বই মেলা শুরু হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী যেমন লোকসমাগম হচ্ছে না। তেমন বেচাকেনাও হয়নি। সেজন্য সকল বিষয় বিবেচনা করে ব্যবসায়ীদের পক্ষে মেলার সময় আরও ৫ দিন বর্ধিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়ায় অনেকটা হতাশ তারা। তবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সচিব বিবেক চন্দ্র সরকার বলেন, শেষ মুহূর্তে অন্যান্য বছরের তুলনায় মেলায় আশানুরূপ লোক সমাগম ঘটছে। ২-১ দিনের মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে গত বছরের চেয়ে বেশি রপ্তানি আদেশ আসবে বলে তিনি আশাবাদী।